Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মুজিববর্ষে ফসল উৎপাদনে ন্যানো ফার্টিলাইজার

কৃষিবিদ এম. আব্দুল মোমিন
ন্যানো ফার্টিলাইজার বা সার হচ্ছে ‘¯েøা রিলিজার’। এটি ফসলের ক্ষেতে ব্যবহার করলে গাছের গোড়ায় জমা থাকবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী গাছকে পুষ্টি সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। কোন অপচয় যেমন হবে না, তেমনি গাছটিও সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করতে পারবে। আকারে ছোট হওয়ায় বীজের ক্ষুদ্র ছিদ্র দিয়ে এই পার্টিকেল বীজের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেও প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করতে পারবে। ফলে উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
ফসল উৎপাদনে গুরুত্বপ‚র্ণ উপাদান সার। আগের দিনে    কৃষক গৃহস্থালির সমস্ত আবর্জনা এক জায়গায় জমা করত পচিয়ে সার হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে। গোয়াল থেকে যে সমস্ত গোবর বা গৃহপালিত পশু পাখির বিষ্ঠা আসতো সেগুলোকে পচিয়ে জমিতে দিতো, এতে ভাল ফসল হতো। ৬০ দশকের পর সার যখন বাজারে ইউরিয়া, নাইট্রেজেন, ফসফারস এবং পটাশ আসে, তখন সার দেওয়ার সাথে সাথে ফসল উৎপাদন বাড়া শুরু হলো। ৭০ দশকের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কৃষি কার্যক্রম জোরদারকরণের জন্য ‘‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে’’ এ সেøাগান তুলে সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। কৃষক দরদি এ মানুষটি দেশ স্বাধীনের পর বাইশ লক্ষ কৃষক পরিবারকে পুনর্বাসিত করেছিলেন। বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে তিনি উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক ইত্যাদি সরবরাহ করেছিলেন। তিনি শিক্ষিত যুবকদেরকে আধুনিক পদ্ধতিতে নিবিড় কৃষি কাজ করার জন্য প্রেরণা দিয়েছিলেন এবং উদ্বুদ্ধ করেছিলেন যেন আমাদের দেশের উর্বর মাটির এক ইঞ্চিও অনাবাদি না থাকে। জাতির জনকের নির্দেশনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ দেশের আপামর কৃষক সমাজ ঝাঁপিয়ে পড়ে উৎপাদন বৃদ্ধির নতুন সংগ্রামে। প্রচলিত পদ্ধতির নিবিড় চাষাবাদের কারণে উর্বরতা হারাতে থাকে মাটি। মাটির উর্বরতা রক্ষা ও স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি উৎপাদনের তাগিদে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে রাসায়নিক সার। কৃষকেরা ম্যাক্রো       নিউট্রিয়েন্ট হিসেবে জমিতে রাসায়নিক সার (এনপিকে) নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম ব্যবহার বৃদ্ধি পেল। কিন্তু মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি ও সুরক্ষার জন্য কৃষক জমিতে যে সার ব্যবহার করে তার মাত্র ৩০ থেকে ৩৪ ভাগ ফসলের কাজে লাগে। আর শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ অপচয়ের মাধ্যমে ক্ষেতের পার্শ্ববর্তী জলাশয় বা অন্যান্য পানির সঙ্গে মিশে পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে থাকে।
আরেকটি ভাবনার বিষয় হচ্ছে, কৃষকদের একটা প্রচলিত ধারণা হলো বেশি সার দিলে উৎপাদন বেশি হয়। ফলে তারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত সার ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু সার ক্ষেতে দেওয়ার পর প্রায় ৭০ ভাগ সার গ্যাস আকারে উড়ে যায় অথবা মাটির নিচে লিচিং হয়ে মাটি ও পানিতে মিশে দূষিত করে পরিবেশ। এতে একদিকে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, আরেক দিকে অ্যামোনিয়া আকাশে উড়ে গেøাবাল ওয়ার্মিং হচ্ছে। এর কারণে বায়ুমÐলের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এ সমস্যা থেকে উত্তোরণের উপায় বের করেছেন বিজ্ঞানীরা। গেøাবাল ওয়ার্মিং এড়াতেই নতুন টেকনোলজি ‘ন্যানো সার’ বা ন্যানো ফার্টিলাইজার উদ্ভাবন করেছেন গবেষকরা। এটি ন্যানো মিটার দিয়ে পরিমাপ করা হয়। ১ ন্যানোমিটার সমান টেন টু দি পাওয়ার মাইনাস ৯ মিটার বা ১ বিলিয়ন অফ এ মিটার। বস্তুকে ভেঙ্গে যখন অতটা ক্ষুদ্রতর পর্যায়ে নেয়া হয় তখন তার কার্যক্ষমতা বহুলাংশে বেড়ে যায়, অনেকটা পারমাণবিক শক্তির মতো। ন্যানো পার্টিকেলের আকার অনুর চাইতে সামান্য বড়ো।
বিশ্বের সর্বাধুনিক ন্যানো টেকনোলজির সাহায্যে উদ্ভাবিত ‘ন্যানো সার’ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং উৎপাদন ব্যয় কমানোর পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী আনবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ কাউন্সিল ফর সাইন্টিফিক এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (বিসিএসআইআর) এর বিজ্ঞানীগণ ’ন্যানো ফার্টিলাইজার’ তৈরীর পর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদনে যাবার জন্য নিজস্ব উদ্যোগে এর গবেষণা কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ন্যানো টেকনোলজি বিশ্বের অত্যাধুনিক ক্ষুদ্র প্রযুক্তি যা সহজেই ফসলের মূলে প্রবেশ করে তার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করতে পারবে। এর ব্যবহারে তৈরি সার ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় হ্রাস এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাতেও সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
ন্যানো ফার্টিলাইজার ধরন : এটা এমন একটি সার যেখানে ফসলের প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি উপাদানকে অনেক কম মাত্রায়, একসাথে মিশিয়ে উপাদানগুলোকে কম্প্যাক্ট করে পলিমারাইজড করা হয়। ফলে স্থায়িত্ব বেড়ে যায়। ফসলের গাছ দ্রæত এটা নিতে পারছে। এটা আট মাস পর্যন্ত রাখা যায়। এতে লাভ হচ্ছে একবার সার ব্যবহার করে দুই ফসল ফলানো যাচ্ছে। কেননা আমাদের দেশে এক বছরে প্রায় দুই বা তিনটি ফসল হয়। এখন ফসলের জন্য একাধিকবার সার দিতে হয়, এতে আনুপাতিক হারে মাটি ও পানি দূষিত হচ্ছে। আবার এমোনিয়া আকাশে উড়ে, বায়ুমÐল দ‚ষিত হচ্ছে। কৃষককে কিন্তু এগুলো কিনতে হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
দ্বিতীয়টি হলো অ্যাপ্লিকেশনের দিক দিয়ে বৈচিত্র্য আসছে। আমাদের দেশের কৃষক নাইট্রোজেন ফসফেট কিনে নিয়ে যায় বস্তা ধরে। তিনটা বস্তা নিলো, নিয়ে গিয়ে ক্ষেতের পাশে একটা চট পেড়ে নিলো। তার উপরে ঢেলে দিলো, তারপর হাত দিয়ে মিশানো শুরু করল। এখন একটা ফসফেটের দানা একটা  ইউরিয়ার দানার চেয়ে অনেক বড়। আবার একটা ইউরিয়ার দানা ফসফেটের দানার চেয়ে অনেক ছোট। আর পটাশিয়াম এর দানাটা কৃস্টাল। তিনটাকে মেশানো হলো। ছড়ানোর সময় কি হলো, বড় দানাটা আগে হাতে আসবে, তাহলে যে এলাকাতে বড় দানাটা পড়ল, সেখানে ফসফেট বেশি পড়লো। তারপর আরেক পাশে ইউরিয়া বেশি পড়ল। পরের পাশে   পটাশিয়াম বেশি পড়ল। একই ক্ষেতের মধ্যে, অর্থাৎ একটা কৃষকের ক্ষেত যদি বিশ শতক হয়, তার মধ্যে যদি তিন ভাগের এক ভাগে ফসফেট বেশি পড়ে, তারপর তিন ভাগের আরেক ভাগে ইউরিয়া বেশি পড়ে এবং তিন ভাগের অপর ভাগে    পটাশিয়াম বেশি পড়ে, ফলনের তারতম্য হবে।
ন্যানো ফার্টিলাইজার কিন্তু একটা নতুন টেকনোলজি। এটাকে কৃষকের কাছে কমিউনিকেট করতে হবে। ইদানীংকালে যেটা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে ফার্টিলাইজার আইন আছে, পলিসি আছে এবং এগুলোর একটা মানদÐ আছে। ন্যানো ফার্টিলাইজার হলো এখনকার সলিউশন বা সমাধান। ইতোমধ্যে ন্যানো ফার্টিলাইজারের টেস্ট ট্রায়েল শুরু করেছে বেসরকারি সংস্থা এসিআই লিমিটেড।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, চা বাগানের গাছগুলো আলাদা আলাদা থাকে। গাছের গোড়ায় যদি ৫০ গ্রামের গ্রানয়েল (ন্যানো ফার্টিলাইজার) দিয়ে দেয়া হয়, সেটা চায়ের যে লাইফ সাইকেল আছে অর্থাৎ উৎপাদনের সময়টা সাত আট মাস, এই পুরো সময়টা চা উৎপাদন করা যাবে। চা বাগানে সার ছড়িয়ে দিলে বৃষ্টি হলে পানিতে গড়িয়ে নিচে চলে যায়। অনেক সময় লিচিং হয় না, মাটিতে মেশে না। সেক্ষেত্রে গাছের গোড়াতে ফার্টিলাইজারটা ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে না। এই ন্যানো ফার্টিলাইজার চা বাগানে অনেক বেশি দেওয়া লাগবে না। এতে করে একদিনে একজন শ্রমিক এক একর জমিতে সার ছিটাতে যে পরিমাণ খরচ হয় তার অনেক কম খরচ হবে, বাড়তি লেবার লাগবে না, তেমনি বাড়তি সারও লাগবে না।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে অর্গানিক ফার্টিলাইজার। আমাদের জমিগুলো প্রতিনিয়ত চাষবাসের কারণে কম্প্যাক্ট হয়ে যাচ্ছে। মাটির নিচে কিন্তু অক্সিজেন দরকার এবং মাটি ফাঁপা হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে এখানে যদি অর্গানিক সার দেই তাহলে কিন্তু জমির উর্বর হবে। আমাদের দেশে কিন্তু অনেক কিছুর ওয়েস্টেজ হয়, যেমন কুসরের ছোবড়া, পাটকাঠি, বাড়ির আবর্জনা, গোবর, মুরগির বিষ্ঠা সবকিছু মিলে কিন্তু অনেক ওয়েস্ট আছে। এই ওয়েস্টগুলোকে যদি আমরা সঠিক নিয়মে একসাথে করে মাইক্রোবিল দিয়ে ট্রিট করতে পারি, তাহলে হবে কি এই সমস্ত ফার্টিলাইজার যেমন একদিকে মাটি ফাঁপা করবে। আরেকদিকে পানির রিটেনশন বাড়াবে। পানি ধারণক্ষমতা বাড়াবে। সাথে সাথে শিকড়ের সক্ষমতা বাড়াবে এবং গাছের যেসমস্ত উপাদান দরকার হয় তা সরবরাহ করবে। অন্য সার প্রয়োগের পর এই সারগুলো গাছ নিতে পারবে। তাতে ফসলের ফলন অনেক বেড়ে যাবে।
ন্যানো টেকনোলজির প্রয়োগ বিশ্বব্যাপী শিল্পায়নের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সে ক্ষেত্রে বিশ্বের উন্নত দেশের মতো ন্যানো ফার্টিলাইজার তৈরি করে তা দেশের কৃষকদের হাতে তুলে দিতে পারলে সার্বিক উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী অগ্রগতি সাধিত হবে। য়

ঊর্ধ্বতন যোগাযোগ কর্মকর্তা, ব্রি, গাজীপুর, মোবাইল : ০১৭১৬৫৪০৩৮০, ইমেইল-ংsmmomin80@gmail.com.

 

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon